স্পোর্স ডেস্ক : সময়ের চাকা ঘুরেছে চার বছর। আবার অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচন। তবে চিত্র বদলায়নি। আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। এই নিয়ে টানা চতুর্থবার বাফুফে প্রধান হলেন তিনি। আর সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আবারো নির্বাচিত হয়েছেন সালাম মুর্শেদী।
রাজধানীর একটি হোটেলে ভোট গণনা শেষে রাত ৮টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন।
বাফুফে নির্বাচনে এবার সভাপতি পদে বিজয়ী সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিন ভোট পেয়েছেন ৯৪টি। তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক ১টি ও বাদল রায় ৪০টি ভোট পেয়েছেন। আর সহ-সভাপতি পদে সালাম মুর্শেদী ভোট পেয়েছেন ৯১টি। প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ মোহাম্মদ আসলাম পেয়েছেন ৪৪টি।
এছাড়া চারটি সহ-সভাপতি পদের মধ্যে তিনটিতে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ ইমরুল হাসান (৮৯), কাজী নাবিল আহমেদ (৮১) ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক (৭৫)। তাবিথ আউয়াল ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহী সমান ৬৫টি করে ভোট পেয়েছেন। ফলে চতুর্থ সহ-সভাপতি পদের জন্য এই দুই প্রার্থীর মধ্যে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাহী সদস্য পদে ১৫ জনের মধ্যে কাজী সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদীর নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত ফুটবল পরিষদ থেকে নয় জন এবং সমন্বয় পরিষদ থেকে ছয় জন নির্বাচিত হয়েছেন।
সম্মিলিত পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মো. জাকির হোসেন (৮৭), বিজন বড়ুয়া (৮৫), নুরুল ইসলাম নুরু (৮৪), মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম (৮৪), সত্যজিৎ দাশ রুপু (৭৬), ইলিয়াছ হোসেন (৭৫), ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (৭৪), মাহফুজা আক্তার কিরণ (৭০) ও হারুনুর রশিদ (৭০)।
সমন্বয় পরিষদ থেকে আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু (৮৬), আরিফ হোসেন মুন (৮৫), টিপু সুলতান (৮১), আমের খান (৭৯), সাইফুল ইসলাম (৬৯) ও মহিদুর রহমান মিরাজ (৬৮) নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে জিতলেও অনেকদিন থেকেই সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের কর্মকাণ্ডের ব্যবচ্ছেদ হয়ে আসছিলেন সালাউদ্দিন। মূলত তার কাছে যে প্রত্যাশা ছিল ফুটবল অনুরাগীদের তা পূরণ না হয়নি। তাকে নিয়ে তাই সমালোচনায় মাতে ফুটবলভক্তরা। এমনকি শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ভোট চলাকালীন সময়েও বাইরে একদল সমর্থক তার বিপক্ষে বিক্ষোভ করেছেন।
এর আগে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন কাজী সালাউদ্দিন। মেজর জেনারেল আমিন আহমেদকে হারিয়ে সেবার দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের চেয়ার জেতেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার।
পরের দফায় অবশ্য নির্বাচন করতে হয়নি সালাউদ্দিনকে। ২০১২ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৬ বাফুফে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে কামরুল আশরাফকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বাফুফে সভাপতি হন দেশের ফুটবলের এ কিংবদন্তি।
সভাপতি পদটি ছাড়া আরও ২০টি পদে মোট ৪৭ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন এবারের নির্বাচনে। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে লড়েছেন দুজন। সম্মিলিত পরিষদের সালাম মুর্শেদী ও সমন্বয় পরিষদ থেকে থেকে শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
চারটি সহ-সভাপতি পদে মোট ৮ জন লড়াই করেছেন। সম্মিলিত পরিষদ থেকে নির্বাচন করছেন কাজী নাবিল আহমেদ, ইমরুল হাসান, আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও আমিরুল ইসলাম বাবু। সমন্বয় পরিষদ থেকে মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান ও আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান লড়ছেন। এছাড়া স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন তাবিথ আউয়াল। আর ১৫টি সদস্য পদে লড়াই করেছেন ৩৪ জন প্রার্থী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মেজবাহ উদ্দিন। কমিশনার হিসেবে ছিলেন মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী ও মোহাতার হোসেইন সাজু।
নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার থেকে ভেন্যু হোটেল সোনাগাঁওকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ভোটের দিন বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন পুলিশ ও এনএসআইয়ের সদস্যরাও।
Leave a Reply