মোঃ নাসির, নিউ জার্সি (আমেরিকা) প্রতিনিধিঃ যেসব মানুষ মাথার চুল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তাদের জন্য সুখবর দিয়েছে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি কনসার্ট ফার্মাসিউটিক্যালস। টাক মাথায় চুল ফিরে পাওয়ার নতুন একটি ওষুধ আবিষ্কার করেছে তারা। ওষুধটি পরীক্ষামূলক ব্যবহারে মানুষের মাথায় ছয় মাসের মধ্যে চুল গজিয়েছে বলে দাবি তাদের।ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধেক মানুষের পুরো মাথায় চুল গজিয়েছে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে। টাক নিয়ন্ত্রণে নতুন এই ওষুধের আবিষ্কারকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ বলে অভিহিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
কনসার্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি এই ওষুধ দিনে দু’বার সেবন করতে হত।টাক সমস্যা হল একটি অটোইমিউন ব্যাধি। যেখানে চুলের গ্রন্থিকোষ ভুলভাবে ইমিউন সিস্টেম দ্বারা আক্রান্ত হয়। যার ফলে চুল পড়ে যায়। কারও কারও মাথায় একাধিক ছোট ছোট টাক থাকে এবং তাদের চুল স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে। কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে মাথার ত্বকের সব চুল পড়ে যায়। এই টাক অবস্থার কোনও প্রতিকার নেই। তবে কিছু ওষুধ পুনরায় চুল গজাতে সাহায্য করতে পারে।
ওষুধ কোম্পানি কনসার্ট ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭০৬ জন মানুষের ওপর তাদের ওষুধের পরীক্ষা চালিয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সবারই মাঝারি থেকে গুরুতর অ্যালোপেসিয়া অ্যারিয়াটা ছিল।তাদের প্রাথমিকভাবে তিনটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দলকে ৮ মিলিগ্রামের দু’টি বড়ি দিনে দু’বার সেবন করার জন্য দেওয়া হয়। আরেকটি দলকে দৈনিক ১২ মিলিগ্রামের দু’টি বড়ি দেওয়া হয়। এছাড়া অপর গ্রুপকে দেওয়া হয় প্লাসেবো।
কনসার্টের পরীক্ষায় দেখা যায়, যাদের প্ল্যাসেবো দেওয়া হয়েছিল তাদের তুলনায় যারা বড়িগুলো সেবন করেছিলেন, তাদের মাথার ত্বকে চুলের বৃদ্ধি বেশি হয়েছে। ১২ মিলিগ্রাম ডোজ যারা গ্রহণ করেছিলেন, তাদের প্রায় ৪২ শতাংশ রোগীর ৮০ শতাংশ বা তারও বেশি চুল গজিয়েছে। এছাড়া ৮ মিলিগ্রাম ডোজ গ্রহণকারীদের ৩০ শতাংশ চুল আবার গজিয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কিছু রোগীর ক্ষেত্রে মাথাব্যথা এবং ব্রণসহ অন্যান্য হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সিটিপি-৫৪৩ নামের এই ওষুধটির অ্যালোপেসিয়ার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত ফলে মিলছে এসব।
শেষ ধাপের পরীক্ষায় দেখা যায়, প্রতি ১০ জন রোগীর মধ্যে চারজনের ৮০ শতাংশ অথবা তারও বেশি চুল এক বছরের মধ্যে ফের গজিয়েছে। এই গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের বিক্ষিপ্তভাবে এবং ডাবল-ব্লাইন্ড পদ্ধতি অনুসারে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
Leave a Reply